সেফহোম থেকে নতুন জীবন পেল মায়া তারা লতারা



স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজশাহী
চাকরিপ্রাপ্ত সেফহোমের বাকপ্রতিবন্ধীরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

চাকরিপ্রাপ্ত সেফহোমের বাকপ্রতিবন্ধীরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মায়া, তারা, লতা, আসমা, সকলেই বাকপ্রতিবন্ধী। কেউ কথা বলতে পারেন না। এমনকি কেউ কেউ আবার কানেও শুনতে পান না। কথা বলেন ইশারায়। রাজশাহী সেফহোমে থাকা মায়া ও আসমার মত আরও ১০ জন মেয়েকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন সেফহোমের ব্যবস্থাপক লাইজু রাজ্জাক।

ফলে সেফহোমের বন্দী জীবন ছেড়ে নতুন পৃথিবীতে পা রাখছেন তারা। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ওদের বিদায় উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেফহোম কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠান শুরুর পর আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অতিথিদের অনেকের চোখই ভিজে ওঠে।

বেসরকারি সংস্থা ‘ইউসেফ বাংলাদেশে’র পক্ষ থেকে এই মেয়েদের সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আর তাদের মাধ্যমেই স্কয়ার গ্রুপের টেক্সটাইল ডিভিশনে এদের চাকরির বন্দোবস্ত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে অবস্থিত।

অনুষ্ঠানে ইউসেফ’র প্রশিক্ষক রউফুল ইসলাম বলেন, তারা এই ধারা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবেন। প্রশিক্ষণ নেওয়া ১৫ জনের মধ্যে ১০ জন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এরা হলেন- মায়া সুলতানা (১৮), আসমা খাতুন (২০), নাসরিন খাতুন (২৪), তারা (২৫), সালমা (২১), তানিয়া (২৫), আলোকি (২৪), লতা (২৬), জাহানারা (৩০) ও হাজেরা (১৮)।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/23/1566518368316.jpg

তাদের বিদায় অনুষ্ঠানে সেফহোমের উপ-তত্ত্বাবধায়ক লাইজু রাজ্জাক শোনালেন কীভাবে তাদের চাকরির জোগাড় হলো। তিনি একদিন ইউসেফ বাংলাদেশের রাজশাহী কার্যালয়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখেন ‘চাকরির মেলা’ শিরোনামে একটি নোটিশ ঝুলছে। সেখানে গিয়ে তিনি বিস্তারিতভাবে সব তথ্য জানতে পারেন।

পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানার পর তারা মেয়েদের সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করেন। উল্লেখ্য যে, এই চাকরির মেলায় প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ কোটা ছিল। পরবর্তিতে সেফহোমের ১৫ জন মেয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর নির্ধারিত সময়ে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান ‘স্কয়ার গ্রুপ’র কর্মকর্তারা আসেন পরীক্ষা নিতে। সেফহোমেই পরীক্ষা নেওয়া হয় তাদের কাজের। সে পরীক্ষায় পাস করেন ১০ জন এবং পাস করার সাথে সাথেই তাদের দেওয়া হয় নিয়োগপত্র।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/23/1566518405236.jpg

প্রথম অবস্থায় তারা মাসে ছয় হাজার টাকা করে বেতন পাবেন। কাজে ভালো করলে পরের বছরই বেতন বেড়ে হবে ১২ হাজার। থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা তারাই করবে। এজন্য মাসে বেতন থেকে ২ হাজার টাকা কাটা যাবে।

সেফহোমের উপ-তত্ত্বাবধায়ক জানান, আগামী শনিবার তিনি এই মেয়েদের নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যাবেন। নিজ হাতে তাদের ব্যাংক হিসাব নম্বর খুলে দিয়ে আসবেন। যাওয়ার আগেই তাদের জন্য নতুন জমা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যেকের জন্য একটা করে কম্বল, মশারি, এক জোড়া করে স্যান্ডেল ও একটি করে ব্যাগ কিনে দেওয়া হয়েছে। এ সময় তাদের উদ্দেশ্যে সমাজসেবা অধিদফতরের রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক রাশেদুল কবীর বলেন, ‘তোমাদের হয়তো ঠিকমতো দেখাশোনা করতে পারিনি, তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও’।

   

বিশ্ব শান্তির প্রশ্নে কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ প্রত্যাশিত নয়: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, ন্যায্যতা, মানবাধিকার ও বিশ্বশান্তির প্রশ্নে কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ প্রত্যাশিত নয়। এরুপ আচরণ প্রকৃতপক্ষে ভালো ফল বয়ে আনে না।

শুক্রবার (২৪ মে) সকালে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘বিশ্বশান্তি-ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সাপ্তাহিক গণবাংলা ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির সদস্য মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. মো. আওলাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য বলরাম পোদ্দার, আইডিইবি’র সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মোতালিব হোসেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এম এ করিম প্রমুখ।

প্রধান আলোচক হিসেবে অনুষ্ঠানে ধর্মমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও এর জনগণের অধিকারের পক্ষে বাংলাদেশ সবসময় সরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবীর পক্ষে বাংলাদেশ সবসময় উচ্চকিত। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান ফিলিস্তিনের পক্ষে, নায্যতার পক্ষে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইসরায়েলের অবৈধভাবে ফিলিস্তিন দখলের নিন্দা জানায় এবং এটি বন্ধের জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সোচ্চার ভূমকিা পালন করে আসছে।

ফিলিস্তিনের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং মধুর। এ কারণে বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের প্রতি অব্যাহত সমর্থন ব্যক্ত করে আসছে এবং এই সমর্থনের অংশ হিসেবে গত ৫৩ বছরে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি বাংলাদেশ। সারাবিশ্বে বাংলাদেশেই একমাত্র দেশ, যে দেশ তার পাসপোর্টে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করে রেখেছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমলিন উক্তি ‘বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত-শোষক এবং শোষিত; আমি শোষিতের পক্ষে’ উদ্ধৃত করে ধর্মমন্ত্রী বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আমাদের অবস্থান মাবনাধিকার ও নায্যতার পক্ষে। আমাদের অবস্থান শান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষে। শোষক ও শোষিতের মধ্যে আমাদের অবস্থান সবসময় শোষিতের অনকূলে।

মো. ফরিদুল হক খান বলেন, মক্কা ও মদিনার পর জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদকে ইসলামের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বের ২শ’ কোটি মুসলিমের আবেগ-অনুভূতির সাথে জেরুজালেমের সম্পর্ক। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের ১৫ কোটির বেশি মুসলমানের আবেগ-অনুভূতির সাথেও জেরুজালেমের সম্পর্ক।

মুসলমানদের এই অনুভূতিকে অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে, শ্রদ্ধা জানাতে হবে। তিনি ইসরাইল এবং তার মিত্রদেরকে আগ্রাসী চিন্তা-চেতনা ও কর্মকা- পরিহার করার আহ্বান জানান।

;

এমপি আনার হত্যা: ১২ দিনের রিমান্ডে জিহাদ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদকে ১২ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন ভারতের বারাসাতের আদালত। 

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে জিহাদকে গ্রেফতার করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি)। পরে স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৪ মে) বেলা ১১টার দিকে গ্রেফতার জিহাদ হাওলাদারকে আদালতে তোলা হয়। 

আদালতে ১৪ দিনের পুলিশি রিমান্ড চাইলে আদালত ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাতে এক বিবৃতিতে ভারতের সিআইডি জানায়, ২৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির (জিহাদ) বাড়ি বাংলাদেশের খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার বারাকপুর গ্রামে। তার বাবার নাম জয়নাল হাওলাদার। অবৈধভাবে মুম্বাইয়ে বাস করতেন জিহাদ। তিনি পেশায় কসাই এবং মুম্বাইয়ের ‘শীর্ষ কসাই’ বলে জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এমপি আনার হত্যার পরিকল্পনাকারীরা মুম্বাই থেকে জিহাদকে নিয়ে আসেন। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে মুম্বাইতে বসবাস করছিলেন জিহাদ। দুই মাস আগে তাকে কলকাতায় নিয়ে আসেন বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন, যিনি এই হত্যাকাণ্ডের ‘মূলহোতা’ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছেন, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চার জন এমপি আনারকে নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন।

তারপর ওই ফ্ল্যাটের মধ্যেই পুরো শরীর থেকে সব মাংস আলাদা করে জিহাদ এবং ‘মাংসের কিমা করে’ তারপর তা কিছু পলিথিনে রেখে দেয়। হাড়গুলোকেও ছোট ছোট টুকরো করে প্যাকেট করা হয়। পরে সেই প্যাকেটগুলো ফ্ল্যাট থেকে বের করে বিভিন্ন ধরনের পরিবহন ব্যবহার করে কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় ফেলে দেয়া হয়।

এমন তথ্য পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই কলকাতার কাশিপুর থানার অন্তর্গত ভাঙ্গরের কৃষ্ণমাটি নামক এলাকায় অভিযানে যায় পশ্চিমবঙ্গ গোয়েন্দা পুলিশ। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে তারা। সরিয়ে দেয়া হয় আশপাশের লোকজনকে।

যদিও এখন পর্যন্ত মরদেহের কোনো অংশ উদ্ধার করা যায়নি। তবে তা খুঁজতে এবার মাঠে নেমেছে স্থানীয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ।

;

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন

খোলা আকাশের নিচে ৪ হাজার রোহিঙ্গা



আবদু রশিদ মানিক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার 
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার (২৪ মে) সকাল সাড়ে দশটা। কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তীব্র গরমের মধ্যে মানুষের যখন হাঁসফাঁস অবস্থা তখন থাইংখালী ১৩ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কারিতাসের সেল্টার অফিস থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মানুষের তখন ছুটাছুটি শুরু হয়ে যায়। মিয়ানমার থেকে এসে তিলে তিলে যে জিনিসপত্রগুলো ছোট্ট ঘরটাতে সঞ্চয় করেছে সেগুলো বাঁচাতে তাদের আকুতির কোন শেষ নেই।

তখন থেকে ক্যাম্পের আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। একে একে যোগ দেয় ৮টি ইউনিট। তাদের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুনের লেলিহান শিখা। কিন্তু তার আগেই আগুনে পুড়ে যায় হাজারো রোহিঙ্গাদের স্বপ্ন। হাজারো রোহিঙ্গা এখন খোলা আকাশের নিচে আশ্রয়হীন। তবে কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।


ক্যাম্প থেকে পাওয়া ইন্সিডেন্ট রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্যাম্পের আগুনে ৪৩০টি শেল্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেখানে পুড়ে গেছে ২১০টি শেল্টার। যার কারণে ৪ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া ২২০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ৪৫টি দোকান পুড়ে গেছে। 

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক অতীশ চাকমা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'ক্যাম্পের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সকাল সাড়ে দশটার দিকে খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমরা কাজ শুরু করি। ফায়ার সার্ভিসের ৮ টি টিম আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। যেখানে ২ শতাধিক শেল্টার পুড়ে গেছে।'

রোহিঙ্গারা জানান, হঠাৎ কারিতাস অফিস থেকে আগুন ধরলে আমরা নিরাপদে ছুটে আসি। তারপর ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। আমরা এখন খোলা আকাশের নিচে।

এবিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, 'বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার সাথে সমন্বয় করে বিষয়টি নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'  

;

এনএসআইয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা, স্বামী-স্ত্রী গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে এনএসআইয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে প্রতারক চক্রের মূলহোতা মমতাজ বেগম ও তার সহযোগী স্বামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বুধবার (২২ মে) রাতে তাদের দুজনকে সীতাকুন্ড থেকে আটক করা হয়। যদিও র‌্যাব শুক্রবার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানায়।

র‌্যাব জানায়, মমতাজ বেগম ও তার স্বামী মুজিবুর রহমান এর দ্বারা প্রতারণার স্বীকার ভুক্তভোগী মুঞ্জুর আলম এসএসসি পাস করার পর থেকে চাকুরির জন্য চেষ্টা করে আসছিল। গত ২০২১ সালে তার ভাগিনীর বিয়েতে মমতাজ বেগমের সাথে ভিকটিমের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে তিনি জানতে পারেন মমতাজ বেগম জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা এনএসআইয়ের উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছে। মমতাজ বেগম ভিকটিম মুঞ্জুর আলমকে এনএসআই এর ফিল্ড অফিসার পদে চাকরী লাভের প্রলোভন দেখায়। সেই ফাঁদে পা দিয়ে চাকুরী প্রত্যাশী মুঞ্জুর আলমকে মমতাজ বেগম টাকার বিনিময়ে এনএসআই এর ফিল্ড অফিসার পদে চাকুরী দিবে মর্মে আশ্বস্ত করে।

এনএসআই এর ফিল্ড অফিসার পদে চাকরি পাওয়ার আশায় ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর মঞ্জুর আলম ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তার মামা একরাম হোসেন ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও তার বন্ধু নয়ন ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং বোন জামাই ১২ লাখ টাকা সহ সর্বমোট ৩৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা মমতাজ বেগমকে দেয়। এই টাকার সিকিউরিটি হিসেবে স্ট্যাম্পে প্রতারকরা লিখিত অঙ্গীকারনামা প্রদান করে এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার ৫টি চেক প্রদান করে। দীর্ঘ ২ বছর ৬ মাস পর এনএসআই এর সার্কুলার হলেও মমতাজ বেগম তাদেরকে চাকরি দিতে ব্যর্থ হয়।

পরবর্তীতে খোঁজ খবর নিয়ে তারা জানতে পারে, মমতাজ বেগম এনএসআই এর উপ-পরিচালক পদে কখনোই চাকরি করেনি এবং সরকারি কর্মকর্তার মিথ্যা পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। পরবর্তীতে টাকা ফেরত চাইলে মমতাজ বেগম ও তার স্বামী তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং হুমকি দেয়।

এ ঘটনায় চাকরি প্রত্যাশীরা র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর লিখিত আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে র‍্যাবের সাথে মাঠে নামে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই)।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. শরীফ-উল-আলম জানান, ২২ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সীতাকুণ্ডের প্রেমতলা কলেজ রোড এলাকায় বসতবাড়িতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আসামি মমতাজ বেগমকে (৩৪) আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মতে হেফাজতে থাকা শোয়ার ঘরের খাটের নিচে বিশেষ কৌশলে রাখা ৫টি বায়ুরোধক পলিপ্যাক হতে ৯৬০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এ সময় বসত ঘর তল্লাশি করে প্রতারণার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ডকুমেন্টও জব্দ করা হয়। পরে মমতাজ বেগমের দেওয়া তথ্যমতে র‍্যাব ও এনএসআই এর আভিযানিক দল অপরাধের সহযোগী তার স্বামী মো. মুজিবুর রহমানকে (৪৬) মাহমুদাবাদ দীঘির পাড় এলাকার বসতঘর থেকে আটক করা হয়।

মুজিবুর স্বীকার করেছে, সে তার স্ত্রী মমতাজ বেগমকে এনএসআইয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন লোকজনদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। এছাড়া মমতাজ দীর্ঘদিন যাবৎ ইয়াবা ট্যাবলেট বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে খুচরা বিক্রি করে আসছে।

প্রতারক স্বামী-স্ত্রীকে সীতাকুণ্ড থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান ‌র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

;